নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ এম. আকাবার ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফর সমাপ্ত করেছেন। তাঁর এই সফরটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং সাফল্যমণ্ডিত, যা বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ এম. আকাবার ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফর সফলভাবে সম্পন্ন
ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ – নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ এম. আকাবা সফলভাবে তার ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফর সম্পন্ন করেছেন। সফরের অংশ হিসেবে, তিনি তরুণ সমাজ, একাডেমিয়া, সরকারি কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের সাথে ব্যাপক মতবিনিময় করেছেন, যা বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক হতে পারে।
আকাবা সফরের সময় শিক্ষার্থীদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্টিভ সেশনেও অংশ নেন, যেখানে তিনি তরুণদের মহাকাশ বিজ্ঞান, রোবটিক্স, স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) এবং গবেষণায় ক্যারিয়ার গড়তে উৎসাহিত করেন। তিনি এসব ক্ষেত্রের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে তরুণ প্রজন্মকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানে অবদান রাখার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
একটি বিশেষ বক্তৃতায় আকাবা মহাকাশ অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং জলবায়ু সংকটসহ বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মহাকাশের গবেষণা আমাদের শুধুমাত্র নতুন প্রযুক্তি প্রদান করে না, বরং পৃথিবীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যা।”
নাসার এই শীর্ষ কর্মকর্তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে নাসার বৈশ্বিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদান এবং আর্টেমিস অ্যাকর্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ কীভাবে মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, আর্টেমিস অ্যাকর্ড মহাকাশে একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে, যা বাংলাদেশ এবং নাসার মধ্যে মহাকাশ ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
জোসেফ এম. আকাবা: একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী
জোসেফ এম. আকাবা, একজন আমেরিকান শিক্ষক, হাইড্রোজিওলোজিস্ট এবং প্রাক্তন পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবক, ২০০৪ সালের মে মাসে প্রথম পুয়ের্তো রিকান বংশোদ্ভূত ব্যক্তি হিসেবে নাসার মহাকাশচারী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর, তিনি নাসারের মহাকাশচারী হিসেবে ৩০৬ দিনেরও বেশি সময় মহাকাশে কাটান এবং তিনটি মহাকাশ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করেন এবং সেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সম্পাদন করেন। ২০২৩ সালে তিনি নাসারের অ্যাস্ট্রোনট অফিসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং মহাকাশ অনুসন্ধানে নাসার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে ভূমিকা রাখছেন।
এই সফরের মাধ্যমে আকাবা বাংলাদেশে মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ এবং সম্ভাবনা উন্মোচন করেছেন, যা ভবিষ্যতে নাসার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও গভীর করবে।